মঈন উদ্দিন খান
মামলা-হামলায় জর্জরিত বিএনপি দৃশ্যত নিশ্চুপ সময় পার করছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আন্দোলন কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে না পৌঁছায় বিএনপি বলতে গেলে এই নীরবতা অবলম্বনে বাধ্যই হয়েছে। নতুন নির্বাচনের দাবিতে জানুয়ারি থেকে টানা তিন মাসের আন্দোলন সফল হয়নি। ব্যর্থ হয়েছে সরকারের দমন-পীড়ন টপকে সাংগঠনিক শক্তিমত্তা দেখাতে। বিএনপি যে গতিতে আন্দোলন চালিয়েছে, তার চেয়ে বেশি গতিতে প্রশাসনিক শক্তি ও সাংগঠনিক কূটকৌশল প্রয়োগ করে আওয়ামী লীগ সরকার আন্দোলন দমন করতে সক্ষম হয়েছে। মামলার জালে বন্দী বিএনপি এখন তাই আবারো ঘুরে দাঁড়ানোর পথ খুঁজছে।
অপরদিকে সরকার নিজেকে আরো শক্তিশালী মনে করছে।ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের মধ্য দিয়ে ক্ষমতার ভিত ২০১৯ সাল পর্যন্ত পোক্ত হয়
েছে বলে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে সরব আলোচনাই রয়েছে।
বিএনপির নেতারা বলছেন, বিএনপি দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক দল। সরকার বিএনপির আন্দোলন গণতান্ত্রিকভাবে মোকাবেলা করেনি, তারা দমন-পীড়ন চালিয়েছে। এর জবাবে বিএনপি যুদ্ধ করতে পারেনি। জনগণকে সাথে নিয়েই বিএনপি এখন নতুন কর্মপন্থা ঠিক করে সামনে এগিয়ে যাবে।
দল পুনর্গঠনের যে আওয়াজ বিএনপিতে উঠেছে, তা সময়োচিত। কিন্তু বহু নেতাকর্মী কারাগারে থাকায় এখনই বিএনপি কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না। নেতাকর্মীদের মুক্তি নিশ্চিত হলে কোরবানির ঈদের আগে অথবা পরে দল গোছাতে কাউন্সিল হতে পারে। আসন্ন রমজান মাসে সাংগঠনিক কার্যক্রম কিছুটা জোরদার করার চিন্তাভাবনা করছে দলটি।
আন্দোলনে গ্রেফতার হওয়া দলের নেতাকর্মীদের মুক্তিই এখন বেগম খালেদা জিয়ার কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। দল গোছানোর কথা বললেও এখনো তিনি এ নিয়ে কোনো গাইডলাইন দলের কাউকে দেননি। শীর্ষ নেতাদের সাথে কোনো বৈঠকও করেননি। তবে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট সঙ্কট নিরসনে কূটনৈতিক তৎপরতা আরো জোরদারে মনোযোগ রয়েছে তার।
বিএনপির ৭৫টি সাংগঠনিক জেলার সবগুলো কমিটিই মেয়াদোত্তীর্ণ। ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের পর জেলা কমিটি পুনর্গঠন শুরু হয়েছিল। ১২টি জেলা কমিটি ভেঙে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর এ প্রক্রিয়া তখন বন্ধ রাখা হয়। নতুন করে আবারো দাবি উঠেছে, জেলা কমিটিগুলো ঢেলে সাজানোর। যোগ্যদের দিয়ে কমিটি গঠনের। একই সাথে অন্য অঙ্গসংগঠনগুলোর নিষ্ক্রিয়তা কাটাতেও দ্রুত উদ্যোগ নেয়ার দাবি উঠেছে।
দুই দফা আন্দোলন লক্ষ্যচ্যুত হওয়ায় দলের ভেতরে একটি অংশ সমালোচনামুখরও রয়েছেন। আন্দোলন কতটা পরিকল্পিত ছিল, কে কী ভূমিকা রেখেছে তা নিয়ে আলোচনা চলছে। নেতৃত্বে পরিবর্তনের কথা বলছেন কেউ কেউ। সঠিক পরামর্শ না দিয়ে বেগম জিয়াকে বারবার ভুল পথে পরিচালিত করা হচ্ছে, এমন অভিযোগও করা হচ্ছে। দলের একটি অংশ আপাতত জোট বিলুপ্ত করার কথাও বলছেন।
সাংগঠনিক এসব তৎপরতার পাশাপাশি দ্রুত একটি নির্বাচন দিতে সরকারকে চাপে রাখতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে বিএনপি। দলের সিনিয়র তিনজন নেতা এ নিয়ে বিশেষভাবে কাজ করছেন। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানও কূটনৈতিক তৎপরতায় নিজেকে যুক্ত রেখেছেন। সম্প্রতি লন্ডনে জাতিসঙ্ঘের সহকারী মহাসচিব তারানকোর সাথে বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি তারানকোকে ব্রিফ করেছেন তারেক রহমান।
বিএনপি মনে করছে, সরকারের দমন-পীড়ন নিয়ে জনমনে যেমন চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে, তেমনি আন্তর্জাতিক মহলও বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে খুবই অসন্তুষ্ট। তারা নানা ভাষায় এর প্রতিবাদই কেবল করছে না, কী করা উচিত তাও বলে দিচ্ছে। কিন্তু সরকার তা আমলে নিচ্ছে না। বাহ্যিক দৃষ্টিতে সরকার কোনো চাপে নেই বললেও তারা খুবই অস্বস্তিতে দিন পার করছে। তাদের দাবি, এই অস্বস্তি সামনের দিনগুলোতে আরো বাড়বে।
এরই মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরে বেগম খালেদা জিয়ার সাথে ৪৫ মিনিট বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের বেশির ভাগ সময়জুড়েই বাংলাদেশের ‘সঙ্কটাপন্ন’ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন বিএনপি নেতারা। সঙ্কট উত্তরণে জনগণ দ্রুত নিরপেক্ষ একটি জাতীয় নির্বাচন আশা করছে, সে প্রসঙ্গও এসেছে আলোচনায়। নরেন্দ্র মোদি বিএনপির তরফ থেকে উত্থাপিত বিষয়গুলো মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। বৈঠকের শেষ ১৫ মিনিট তিনি একান্তে কথা বলেন খালেদা জিয়ার সাথে। বৈঠকের আদ্যপান্ত নিয়ে বিএনপির মধ্যে ‘ইতিবাচক’ মনোভাব বিরাজ করছে।
বৈঠকে উপস্থিত দলের স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন, নরেন্দ্র মোদির সাথে আলোচনা হয়েছে অত্যন্ত সোহার্দ্য পরিবেশে। বিএনপির পক্ষ থেকে বিগত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পূর্বাপর রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোদিকে অবহিত করা হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলাসহ সার্বিক বিষয় উত্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের বর্তমান অবস্থান তুলে ধরা হয়। কোনো বিষয় মোদি দ্বিমত করেননি। বরং কোনো কোনো বিষয় তিনি একমত পোষণ করেন। এই বৈঠকের পর খালেদা জিয়াও রয়েছেন ফুরফুরে মেজাজে। এই ইতিবাচক মনোভাব কোনো ইঙ্গিত কি না তা সময়ই বলে দেবে।
আ’লীগের লক্ষ্য ২০১৯ সাল
পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে চাপে পড়া বিএনপিকে আপাতত আর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ দেবে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বড় ধরনের কোনো কর্মসূচি নিয়ে দাঁড়াতে দেয়া হবে না রাজপথেও। হরতাল-অবরোধে নাশকতার অভিযোগে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে সারা দেশে দায়ের হওয়া মামলার চার্জশিট প্রস্তুত হচ্ছে। হাইকমান্ডের নির্দেশে দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই দু’টি মামলার চার্জশিট দেয়া হয়েছে। এখন সরকারবিরোধী আন্দোলন নিয়ে রাজপথে নামলেই গ্রেফতার করা হতে পারে বেগম খালেদা জিয়াসহ কারাগারের বাইরে থাকা অন্য নেতাদেরও।
বিএনপির সিনিয়র অনেক নেতা দীর্ঘ সময় ধরে কারান্তরীণ রয়েছেন। আবার মামলা ও হুলিয়া নিয়ে পলাতক রয়েছেন অনেকে। ভঙ্গুর এ সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে দলটি যেন আপাতত রাজপথে না আসতে পারে এমন বাড়তি চাপে রাখতেই সরকারের এ কৌশল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপিদের বক্তব্যেও সেটি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠছে। সম্প্রতি রাজধানীতে এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নেত্রী বলেছিলেন সরকারের পদত্যাগ না করে তিনি নাকি আর ঘরে ফিরবেন না। কিন্তু তিনি আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করে আবার ঘরেও ফিরে গেছেন। জনগণ তার ডাকে সাড়া দেয়নি। এ অশুভ শক্তি যাতে আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সে ব্যাপারে আমাদেরকে সজাগ থাকতে হবে।
গত ৫ জানুয়ারি থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত সারা দেশেনাশকতার অভিযোগে এক হাজার ৭৭৫টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১৭৪টি মামলার চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। ঢাকা মহানগরে এখনো ২৯৫টি মামলা তদন্তাধীন রয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগরে ১০৭টি, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ১১ জেলায় ৩৫৬টি, রাজশাহী রেঞ্জে ২১০টি, ঢাকা রেঞ্জে ২০৩টি, বরিশাল রেঞ্জে ৭৪টি, সিলেট রেঞ্জে ৬৩টি, রংপুর রেঞ্জে ৬৯টি, খুলনা রেঞ্জে ৭৬টি, রেলওয়ে থানায় ৩৩টি মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। এসব মামলায় বিএনপি ও জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় থেকে স্থানীয় বেশির ভাগ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
এ ছাড়া ২০১৩ সালের নাশকতার ৫৪০টি ও ২০১৪ সালের ১৭১টি মামলা এখনো তদন্তাধীন রয়েছে, যা দ্রুত শেষ করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন জেলার এসপি ও ডিসিদের কাছে মামলা দ্রুত শেষ করার তাগিদ দিয়ে এরই মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। একইভাবে মামলার তদন্তকার্যক্রম তদারক করতে ওসিদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সরকারের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, নাশকতার অভিযোগে সারা দেশে দায়ের হওয়া মামলাগুলো শিগগির সচল করে চার্জশিট দেয়ার নির্দেশ রয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের ওপর। পূর্ণ মন্ত্রী না থাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব এখন প্রধানমন্ত্রীর হাতে। মানুষ পুড়িয়ে মারার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ রয়েছে। কয়েক দফায় তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেছেন। প্রায় প্রতিটি মন্ত্রিসভার বৈঠকেই বিভিন্ন জেলার স্থানীয় প্রশাসনের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী কথা বলেন।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে নাশকতা ও মানুষ পুড়িয়ে হত্যার মামলাগুলো সচল করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এতে আরো সক্রিয় হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপরই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানার দু’টি মামলার চার্জশিট দেয়া হয়। শিগগিরই এ সংশ্লিষ্ট বাকি মামলায়ও অভিযোগপত্র দেয়া হতে পারে। দেশব্যাপী নাশকতা, সহিংসতা ও হত্যার অভিযোগে দায়ের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করতে সাত বিভাগে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করার উদ্যোগও নিয়েছে সরকার।
আওয়ামী লীগের নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র জানায়, ঘর গুছিয়ে আগামী ঈদুল আজহার পর বিএনপি আবারো রাজপথে নামতে পারে এমন আশঙ্কা করছে সরকার। আর সম্ভাব্য সেই আন্দোলন দমনের কৌশল হিসেবেই বিভিন্ন মামলার চার্জশিট দিয়ে গ্রেফতারের পথ খোলা রাখা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ মনে করছে, বিএনপির কাছে এখন সরকারবিরোধী আন্দোলনের চেয়ে তাদের নিজেদের দল রক্ষা করাই বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে তারা সেটা টের পেয়েছে। কারণ সব কেন্দ্রে এজেন্ট দেয়ার মতো নেতাকর্মী তাদের ছিল না। এ ছাড়া যাদেরকে এজেন্ট দেয়া হয়েছে বিভিন্ন মামলা ও গ্রেফতারের ভয়ে তারা ভোটকেন্দ্রেও যাননি। তারপরও আওয়ামী লীগ রাজপথের বিরোধীদের নিয়ে অনেকটাই সতর্ক। তাদেরকে আর রাজপথে দাঁড়ানোর সুযোগ দেয়া হবে না।
বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা অসংখ্য মামলাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ক্ষমতা কণ্টকমুক্ত রাখতে চায় আওয়ামী লীগ। যদিওবা এর আগে নির্বাচন দিতে হয়, তাও হবে আওয়ামী লীগের গেম প্লান অনুযায়ী। ওই নির্বাচনের আগেই বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় শাস্তি নিশ্চিত করা হবে, যাতে করে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন। এ তালিকায় খালেদা জিয়া, তারেক রহমানও রয়েছেন।
নরেন্দ্র মোদির ভারত সফরের পর আওয়ামী লীগে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। নেতাকর্মীরা বেশ উচ্ছ্বসিত তারা। এ সফরের মধ্য দিয়ে কংগ্রেস ছাড়াও বিজেপির সাথে সরকারের সম্পর্ক আরো বাড়বে বলে মনে করছেন দলটির নীতিনির্ধারকেরা। তাদের মতে, এতদিন আওয়ামী লীগকে ভারতীয় কংগ্রেসের স্থানীয় শাখা হিসেবে বিভিন্ন মহলে চিহ্নিত করা হতো। দুই দলের ঐতিহাসিক সম্পর্ক এবং অন্ধ সমর্থনের কারণেই এমনটি মনে করা হতো। অন্য দিকে ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপির সাথে বিএনপির সম্পর্ক ভালো বলে বিভিন্ন মহলে ধারণা রয়েছে। সে জন্য ভারতের গত নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি এবং বিজেপির বিপুল বিজয়ে আশাহত হয় আওয়ামী লীগ। কারণ বিজেপির বিজয়ে ভারতের সাথে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের টানাপড়েন সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করছিলেন দলটির নীতিনির্ধারকেরা।
শুধু তাই নয়, ৫ জানুয়ারির ‘ভোটারবিহীন একতরফা’ নির্বাচন নিয়েও কিছুটা শঙ্কায় পড়েন তারা। কংগ্রেস ওই নির্বাচনে আকুণ্ঠ সমর্থন দেয়ার কারণে মোদি সরকার আওয়ামী লীগ সরকারকে সেভাবে মেনে নিতে নাও পারে বলে আশঙ্কা ছিল দল ও সরকারের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিদের। সেজন্য মোদি সরকারের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য ভেতরে-বাইরে বিভিন্ন ধরনের তৎপরতা চালায় সরকার। সে জন্য মোদিকে স্মরণকালের সবচেয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা দেয় সরকার। আর মোদিও বিভিন্ন চুক্তি ও সরকারের আতিথেয়তায় মুগ্ধ। এতে কংগ্রেসের বাইরে বিজেপির সাথেও আওয়ামী লীগের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটবে বলে মনে করছেন দলটির শীর্ষ কর্তাব্যক্তিরা। ফলে বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক স্থায়ী রূপ পাবে বলে মনে করছেন তারা।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক জন্মগত, ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যের। নরেন্দ্র মোদির এ সফরে দুই দেশের আস্থা ও বিশ্বাসের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হয়েছে। ফলে পারস্পরিক বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে একসাথে এগিয়ে যাওয়ার পথ আরো মসৃণ হয়েছে। এ সফরের মধ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে নতুন আশা জেগেছে। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে এ সফর ইতিবাচক। আর ভারত-বাংলাদেশের চুক্তিগুলোর ফলে শুধু ভারতই নয়, বাংলাদেশও আর্থিকভাবে লাভবান হবে।
0 comments:
Post a Comment