WHAT'S NEW?
Loading...

উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও সাংবাদিকতা


এবনে গোলাম সামাদ


মানুষ একমাত্র প্রাণী, যার একটি অর্থনৈতিক জীবন আছে। অর্থনীতি বলতে বোঝায় মানুষ যেভাবে বেঁচে থাকে তার ধরনকে। অন্য প্রাণীর জীবনধারা নির্ভর করে কেবল তার প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর। সে পারে না তার প্রাকৃতিক পরিবেশকে নিয়ন্ত্রিত করতে। কিন্তু মানুষ তার প্রাকৃতিক পরিবেশকে পারে বহুভাবে নিয়ন্ত্রি

ত করতে। শীতের দেশে সেই সব প্রাণী বাঁচে, যাদের দেহে হয় অধিক লোম। কিন্তু শীতের দেশের মানুষের গায়ে তা বলে অধিক লোম হয় না। সে লোমশ প্রাণীর লোম দিয়ে বানায় জামা। যা গায়ে দিয়ে সে নিজেকে রক্ষা করে শীত থেকে। জামা তৈরি মানুষের অর্থনৈতিক ক্রিয়াকাণ্ডের অংশ। মানুষ শীত থেকে বাঁচবার জন্য আগুন জ্বালিয়েছে বন থেকে কাঠ এনে। অন্য প্রাণী আগুন জ্বালাবার কৌশল আবিষ্কার করতে পারেনি। পরে মানুষ তাপশক্তিকে কাজে লাগিয়ে চালিয়েছে বাষ্পশক্তি দিয়ে জটিল যন্ত্রপাতি। অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটা সংজ্ঞা হয়ে দাঁড়িয়েছে, জটিল যন্ত্রপাতির মাধ্যমে তাপশক্তিকে কাজে লাগাতে পারা। তাপশক্তির পরে এসেছে তড়িৎ শক্তির ব্যবহার। কিন্তু তড়িৎ উৎপাদনে মানুষ ব্যবহার করেছে তাপশক্তিকেই। এই মূল কথাগুলোকে ভুলে গিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা বিশ্লেষণ করা চলে না।



ইউরোপ এশিয়ার ওপর টেক্কা দিয়েছিল তাপশক্তি ব্যবহারের প্রকর্ষতার মাধ্যমে। চীনে অনেক জায়গায় পাথুরে কয়লা পাওয়া যেত। চীনারা অনেক অঞ্চলে ব্যবহার করেছে পাথুরে কয়লা। কিন্তু আবিষ্কার করতে পারেনি তাপশক্তির সাহায্যে পানিকে বাষ্পে পরিণত করে তার সাহায্যে যন্ত্র চালানোর কৌশল। ফলে চীনে ঘটেনি যন্ত্র বিপ্লব ; ঘটেছে ইউরোপে। গত কয়েক শ’ বছর ধরে ইউরোপের আধিপত্য চলেছি

ল মূলত জটিল যন্ত্রের ব্যবহারকে নির্ভর করে। কিন্তু এখন অন্যরাও তা ব্যবহার করতে পারছে। যন্ত্রের মাধ্যমে সব রাষ্ট্রই চাচ্ছে অর্থনীতিতে উন্নয়ন।



অর্থনীতির দু’টি দিক। একটি হচ্ছে দ্রব্য উৎপাদন। দ্রব্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে মানুষকে ব্যবহার করতে হয় প্রাকৃতিক নিয়ম। কিন্তু এর একটি দিক হচ্ছে দ্রব্য ভোগের নিয়ম, যা প্রাকৃতিক নিয়মের ওপর নির্ভর করে না। তা নির্ভর করে সামাজিক নিয়মের ওপর। প্রাকৃতিক নিয়ম মানুষ বদলাতে পারে না কিন্তু সামাজিক নিয়ম পারে। এই সামাজিক নিয়ম রচনার ক্ষেত্রে আসে গণতন্ত্রের ধারণা। গণতান্ত্রিক উপায়ে গঠিত সরকার নিয়মতান্ত্রিকভাবে আইন করে নির্দিষ্ট করতে পারে উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কে কতটা পরিমাণে উৎপাদিত দ্রব্য ভোগ করতে পারবে, সেটা। এভাবেই রাষ্ট্র ও অর্থনীতির সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। সম্ভব হয়েছে অর্থনীতির ওপর রাষ্ট্রিক নিয়ন্ত্রণ।
আজকাল আমাদের দেশে কিছু কথিত বুদ্ধিজীবী বলছেন, আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র। এদের কথা শুনে মনে হচ্ছে অর্থনৈতিক উন্নয়ন আর গণতন্ত্র যেন পরস্পরের সাথে সাংঘর্ষিক। কিন্তু ইতিহাস তা বলে না। বর্তমানে যেসব রাষ্ট্রকে বলা হচ্ছে অর্থনৈতিক দিক থেকে উন্নত, তারা সবাই প্রায় হলো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। অর্থনৈতিক উন্নয়ন আর গণতন্ত্র পরস্পরবিরোধী হলে এটা কখনোই হতে পারত না।



অর্থনৈতিক উন্নয়ন আর গণতন্ত্র পরস্পরের বিরোধী, এ ধারণার উদ্ভব হয় ১৯১৭ সালে রুশ বিপ্লব ঘটার পর। রুশ বিপ্লবীরা ঘটাতে চান তাদের দেশে দ্রত শিল্প বিপ্লব। আর এক কথায় জটিল যন্ত্রকেন্দ্রিক অর্থনীতি। রাশিয়ার বিশেষ অবস্থায় তারা মনে করেন কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব ছাড়া এটা সম্ভব হবে না। কেননা, রাষ্ট্রের চেয়ে কমিউনিস্ট (বলশেভিক) পার্টি হলো অনেক সুগঠিত। রাশিয়ায় ঠিক গণতন্ত্র ছিল না। তাই গণতান্ত্রিক উপায়ে আইন করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটানো ছিল বেশ প্রশ্নসাপেক্ষ ব্যাপার। তাই তারা বলেন আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র। তারা মনে করেন, গনতন্ত্র আনবে রাজনৈতিক দলাদলি ও সৃষ্টি করবে বিশৃঙ্খলা। রাশিয়ার উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন শান্তি ও শৃঙ্খলা। রাশিয়ায় জোসেফ স্টালিন ১৯২৮ সাল থেকে গ্রহণ করতে শুরু করেন অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা। যার লক্ষ্য হয় রাশিয়ার মতো একটি কৃষিপ্রধান দেশে দ্রত কলকারখানার অর্থনীতি গড়ে তোলা। কিন্তু এটা করতে যেয়ে কৃষিজীবী মানুষের করা হয় যথেষ্ট ক্ষতি। জোর করে গড়ে তোলা হয় যৌথ খামারব্যবস্থা। যেখান থেকে খাদ্যশস্য শহরে এনে শহরে অবস্থিত কারখানার শ্রমজীবীকে তুলনামূলক সস্তায় খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়। যাতে তারা কারখানায় প্রদান করতে পারে তাদের প্রয়োজনীয় শ্রমশক্তি। এর ফলে গ্রামে দেখা দেয় খাদ্যাভাব। অনেক ক্ষেত্রে সৃষ্টি হয় ভায়বহ দুর্ভিক্ষ। রাশিয়ায় কৃষি অর্থনীতি ও কলকারখানা অর্থনীতির মধ্যে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। অন্য দিকে যেহেতু রাশিয়ায় প্রতিষ্ঠা পায় একদলের রাজত্ব, তাই সর্বসাধারণ হারায় সরকারকে সমালোচনার অধিকার। কাজে কাজেই সরকার হয়ে ওঠে দুর্নীতিপরায়ণ। কেননা, ক্ষমতা মানুষকে এমনিতেই জেদি, পীড়ক ও স্বার্থপর করে তুলতে চায়। সরকার মানে আমলাতন্ত্র। সর্বসাধারণ তাই চেয়েছে সরকারি আমলাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে। গণতন্ত্রে এটা সম্ভব হয় কিন্তু এক দলের রাজত্বে এটা সম্ভব হয় না। এর ফলে রাশিয়ায় ভেঙে পড়েছে এক দলের রাজত্ব।



মানুষ সেখানে চাচ্ছে উদার গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা। রাশিয়া ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের সবচেয়ে শক্তিশালী রিপাবলিক। রাশিয়া ছাড়া সোভিয়েত ইউনিয়নের আরো ১৪টি রিপাবলিক ছিল। অর্থাৎ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল ১৫টি রিপাবলিক নিয়ে গঠিত। কিন্তু রাশিয়ানরা এই ১৫টি রিপাবলিকের ভালো ভালো সরকারি পদগুলো দখল করে। ফলে সোভিয়েত ইউনিয়নে দেখা দেয় জাতিসত্তার সঙ্ঘাত। যতগুলো কারণে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়েছে, তার মধ্যে একটি বড় কারণ হলো জাতিসত্তার সমস্যার সমাধান করতে না পারা। সমস্যাটা এতই প্রবল হয় যে, এখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর হতে পারছে রুশ ও ইউক্রেনিয়ানদের মধ্যে রক্তক্ষরা সঙ্ঘাত। যেটার কথা আগে ভাবা যায়নি।



রাশিয়ায় সব ক’টা রিপাবলিকের সমানাধিকার ছিল না। ১৫টি রিপাবলিকের মধ্যে তিনটি ছিল সবচেয়ে এগিয়ে। এরা হলো রাশিয়া, ইউক্রেন ও বাইলোরাশিয়া। জাতিসঙ্ঘে সোভিয়েত ইউনিয়নের তিনটি প্রতিনিধি থাকত। এরা হলো রাশিয়া থেকে একজন, ইউক্রেন থেকে একজন আর বাইলোরাশিয়া থেকে একজন। অন্য ১২টি রিপাবলিকের কোনো প্রতিনিধি পৃথকভাবে থাকত না জাতিসঙ্ঘে। যদিও দাবি করা হতো সোভিয়েত ইউনিয়নের ১৫টি রিপাবলিক ভোগ করে সমান অধিকার। যেটা ঘটনা ছিল না। আজ রুশ-ইউক্রেন সঙ্ঘাতের মধ্য দিয়ে যেটা খুব নগ্নভাবেই প্রকাশিত হতে পারছে।



সোভিয়েতপন্থী কমিউনিস্টরা সব দেশে প্রচার করেছেন যে, সোভিয়েত ইউনিয়নে আর কোনো মানবসমস্যা নেই। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরেুদ্ধে পশ্চিমি দেশগুলো যা বলে তা হলো বুর্জোয়া অপপ্রচার মাত্র। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে যে, সোভিয়েত ইউনিয়নের সমালোচনা অনেক পরিমাণেই ছিল ন্যায্য। যেটাকে কেবল বুর্জোয়া অপপ্রচার বলে গণ্য করা ছিল ভুল। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়েছে তার আত্ম-অসঙ্গতির জন্য। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভেঙে পড়েনি। সোভিয়েত ইউনিয়নকে ভেঙে ফেলবার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ব্যবহার করতে হয়নি একটিও গুলি।



আমরা সোভিয়েত ইউনিয়নের কথা বলছি, কেননা সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ল. ই ব্রেজনেভের পরামর্শে শেখ মুজিব এ দেশে একদলের রাজত্ব গড়ে চেয়েছিলেন দেশে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন আনতে। বাংলাদেশের ওপর পড়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের অপপ্রভাব। আজ যারা বলছেন, আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র, তারা বহন করে চলেছেন এই অপপ্রভাবেরই ঐতিহ্য। প্রশ্ন হলো, উন্নয়ন বলতে ঠিক কী বুঝতে হবে! উন্নয়ন বলতে কেবলই অর্থনৈতিক উন্নয়ন বোঝানো যুক্তিযুক্ত নয়। উন্নয়ন বলতে বোঝানো উচিত কোন সমাজে মানুষ কতটা ব্যক্তিস্বাধীনতা ভোগ করতে পারছে, তাকেও। অর্থাৎ উন্নয়নের অন্যতম মাপকাঠি হতে হবে ব্যক্তিস্বাধীনতা।



উদার গণতান্ত্রিক-ব্যবস্থায় মানুষ সবচেয়ে অধিক ব্যক্তিস্বাধীনতা ভোগ করতে পারে। গণতন্ত্র উন্নত জীবনব্যবস্থা। কারণ মানুষ এখানে হয়ে পড়ে না রাষ্ট্রযন্ত্রের দাস। বলতে পারে তার আপন দাবিদাওয়ার কথা। নিয়ন্ত্রিত করতে পারে তার আশা-আকাক্সক্ষা অনুসারে রাষ্ট্রকে। গণতন্ত্র নিজেই হলো উন্নয়নের একটি মাপকাঠি। অর্থাৎ সে নিজেই একটি লক্ষ্য। অন্য কোনো লক্ষ্যের মাপকাঠি দিয়ে তার বিচারপ্রচেষ্টা অবান্তর। মানুষের কোনো কিছুই নিখুঁত নয়। বিলাতের রাজনীতিক স্যার উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪-১৯৬৫) একবার বলেছিলেন, উদার গণতন্ত্রের গলদ আছে অনেক। কিন্তু মানুষ রাজনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে এখন পর্যন্ত এর চেয়ে ভালো কিছু আবিষ্কার করতে পারেনি।
আমাদের দেশে যেসব বুদ্ধিজীবী (টেলিভিশন বুদ্ধিজীবী) বলছেন, আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র, তারা গণতন্ত্র এবং উন্নয়ন উভয়ের মধ্যে প্রাচীর তুলতে চাচ্ছেন। যেটা বাস্তবসম্মত নয়। বিশেষ করে বিরাট সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়া থেকে গ্রহণ করা উচিত তাদের শিক্ষা। বাংলাদেশে কেবল অর্থনৈতিক দীনতায় ভুগছে না। ভুগছে রাজনৈতিক দর্শনেরও দীনতায়। যেটাকে কাটিয়ে উঠতে হবে। কারণ মানুষ শেষ পর্যন্ত কতগুলো মূল্যবোধের ভিত্তিতেই সক্রিয় হয়। ভুল মূল্যবোধ তাকে নিয়ে যেতে চায় বিভ্রান্তির পথে।



বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাস অনুশীলন করলে দেখা যায় যে, এই পেশায় একসময় আসতে বাধ্য হন বামপন্থীরা। কেননা সরকারি চাকরির পথ তাদের জন্য ছিল রুদ্ধ। অন্য দিকে সাংবাদিকতা করে তাড়না পেতে পারতেন সমাজের যথেষ্ট প্রতিপত্তি। বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ধারা এখনো বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে সে যুগের বাম চিন্তা-চেতনার ঐতিহ্যে। সাংবাদিকেরা এখানে সব কিছু বিশ্লেষণ করতে চাচ্ছেন বিশেষ তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে। যার সঙ্গে খাচ্ছে না বর্তমান চলামান বাস্তবতার সঙ্গতি। অন্য দিকে আগে লোকে পত্রপত্রিকা পড়তেন সংবাদ জানার জন্য। কিন্তু এখন টেলিভিশনের কল্যাণে সেটা তারা অনেক সহজে অনেক দ্রুত অবগত হতে পারছেন। দৈনিক পত্রিকার কাজ এখন কেবল সংবাদসরবরাহ নয়; তার বিশেষ কাজ হয়ে দাঁড়াচ্ছে সংবাদ-বিশ্লেষণ। অর্থাৎ কী ঘটছে তার কারণ বিশ্লেষণ। কিন্তু আমাদের সাংবাদিকতা এখনো যথেষ্ট বিশ্লেষণধর্মী হতে পারছে না। এটা হতে হলে সাংবাদিকদের অর্জন করতে হবে অনেক বেশি ভূগোল ও ইতিহাসের জ্ঞান। তাদের হতে হবে এ বিষয়ে স্বশিক্ষিত। সাংবাদিকেরা এতকাল কেবল সরকারকে সমালোচনা করে জনপ্রিয় হতে চেয়েছেন। কিন্তু এখন তার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডেরও দিতে হবে সংবাদ। কেবল সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সংবাদ দিলেই হবে না, দেশে ব্যক্তি উদ্যোগে যে অর্থনৈতিক বিকাশ সম্ভব হচ্ছে তুলে ধরতে হবে তারও পরিলেখ।



আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র কথাটা এখন আর আগের মতো ঝকমকে নয়। কেননা, উন্নয়ন ও গণতন্ত্র এখন মনে হচ্ছে পরস্পরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চলেছে ব্যক্তিগত অর্থনৈতিক উদ্যোগে। কিন্তু সে দেশেও এখন রাষ্ট্রকে জড়াতে হচ্ছে বেশ কিছুটা অর্থনীতির সঙ্গে। আমার কয়েক বছর আগে দেখলাম, অতিকায় যৌথ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ‘জেনারেল মোটরস’-কে অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়তে। এই সঙ্কট কাটানোর জন্য মার্কিন কেন্দ্রীয় সরকারকে দিতে হলো অর্থনৈতিক অনুদান। কিন্তু এ সম্পর্কে আমাদের পত্রপত্রিকায় তেমন কোনো আলোচনা হতে দেখা গেল না। অর্থনীতি নিয়ে আমাদের পত্রপত্রিকায় তেমন কোনো আলোচনা হয় না। কেবলই গাওয়া হয় গরিবের দুঃখ নিয়ে কিছু গদবাঁধা গান। আমাদের সাংবাদিকদের হতে হবে অর্থনীতি-সচেতন। অর্থাৎ এখন যা দরকার, তা হলো, অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের অংশগ্রহণ। যা তারা করতে পারেন তাদের গঠনমূলক চিন্তাভাবনা দিয়ে। সাংবাদিকদের কাজ কেবল দোষত্রুটির সমালোচনা করা হতে পারে না।


 

0 comments:

Post a Comment