মেহেদী হাসান
প্লেনে চড়তে আর কষ্ট করে এয়ারপোর্টে যাওয়ার দরকার হবেনা। একেবারে ঘরের দরজা থেকে বের হয়েই চড়ে বসতে পারবেন প্লেনে এবং উড়ে যেতে পারবেন যেখানে খুশী। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও খুব শিঘ্রই এটা হতে যাচ্ছে এক বাস্তব সত্য ঘটনা। বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির অগ্রগতির ধারায় এমন এক গাড়ি আবিষ্ক
ৃত হয়েছে যা রাস্তায় চলবে আবার প্রয়োজন হলে আকাশে উড়াল দিতে পারবে।
আপনি যতই ধনী লোক হোননা কেন এবং আপনার যদি বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল দামী ব্যক্তিগত প্লেন বা প্রাইভেট জেট থাকে তবে তার জন্যও একটি এয়ারপোর্ট দরকার হবে। কিন্তু নব আবিষ্কৃত এ প্লেনের জন্য কোন এয়ারপোর্টের দরকার হবেনা। এর গড়ন একটি প্রাইভেট কারের মত । প্রাইভেট কার আপনি থামান কোথায়; একেবারে ঘরের দরজায় তাইতো? নতুন আবিষ্কৃত এ উড়ন্ত গাড়ি বা ফ্লাইং কার একটি সাধারণ প্রাইভেট কারের মত রাস্তায় চলতে পারবে।
সাধারণ গাড়ির মতই এর চারটি চাকা থাকবে। তবে যেহেতু এটা আকাশে উড়বে তাই এর আছে দুটি ডানা এবং পেছনে একটি প্রপেলার। সে কারনে সাধারণ প্রাইভেট কারের থেকে ডিজাইনে একটু পার্থক্য রয়েছে। তবে ডানা থাকলেও তা যখন গাড়ি আকারে রাস্তায় চলবে তা সম্পূর্ণরুপে পেছনে মোড়ানো থাকবে। রাস্তায় চলতে কোন অসুবিধা হবেনা। যখন আকাশে উড়বে তখন বোতাম টেপার সাথে সাথে এর পাখা দুটি দুদিকে মেলবে এবং দেখতে একটি প্লেনের রূপ ধারন করবে।
স্লোভাকিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান এ ফ্লাইং কার উদ্ভাবন করেছে এবং গত বছর অক্টোবর থেকে পরীক্ষামূলক উডডয়ন করে আসছে। ২০১৭ সাল নাগাদ তারা এটি বাজারে ছাড়বে। এক ট্যাঙ্কি পেট্রোল নিয়ে এ ফ্লাইং কারটি ৪৩০ মাইল পর্যন্ত উড়তে পারবে।
প্রাইভেট কার যেমন যেকোন পাম্প বা গ্যাস স্টেশন থেকে ফিলিং করতে পারে ঠিক তেমনিই এটিও পেট্রোল ভরতে পারবে। আর প্রাইভেট কার বা ক্ষুদ্র যানবাহন যেমন মানুষের সত্যিকার ডোর টু ডোর সার্ভিস দেয় এটি ঠিক সেরকম আপনাকে একেবারে ঘরের দরজায় নিয়ে আসবে এবং ঘরের দরজা থেকে বের হয়েই আপনি আকাশে উড়াল দিতে পারবেন।
তবে যেহেতু আকাশে উড়াল দিতে এর পাখা মেলতে হয় সেজন্য ঘরের দরজা থেকে আকাশে উড়াল দিতে হলে আপনার বাসাটি একটি প্রশস্ত সড়কের পাশে অবস্থিত হতে হবে এবং রাস্তাটি বেশ ফাকা থাকতে হবে। আর যদি আপনার বাসা কোন অলি গলির ভেতরে হয় তাহলে ফ্লাইং কারটিকে একটি প্রাইভেট কারের মতো কিছুক্ষন চালিয়ে কোন প্রশস্ত ফাকা রাস্তা বা খোলা জায়গায় যেতে হবে। তাহলেই আপনি আকাশে উড়াল দিতে পারবেন ।
এখন প্রশ্ন হল এর দাম কত হতে পারে। একটি প্রাইভেট কারের দাম কত? এর সাথে থাকবে ওড়ার ব্যবস্থা। তাই দাম অবশ্যই বেশি হবে। তবে কোম্পানি এখনো তা ঘোষনা করেনি। অ্যারো মবিল নামের ফার্ম এখন পর্যন্ত তিনটি মডেলের ফ্লাইং কার পরীক্ষামূলক উডডয়ন করিয়েছে সফলভাবে। আরো নতুন মডেল এবং সহজ ফ্লাইং কারের পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। এছাড়া তারা চেষ্টা করছে শুরুতেই চালকবিহীন ফ্লাইং কার বাজারে ছাড়া যায় কিনা সে বিষয়ে। এখন পর্যন্ত যে ফ্লাইং কার তারা পরীক্ষা চালিয়েছে তা চালকসহ।
১৯৯০ সাল থেকে ফ্লাইং কার আবিষ্কারের চেষ্টা করে যাচ্ছে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং বিজ্ঞানীরা। তবে এবার তা বাস্তবে রূপ নিয়েছে । ঢাকার যানজট নিয়ে ইদানিং আমরা কিছু কিছু ব্যাঙ্গচিত্র এবং কার্টুন দেখি যেখানে দেখানো হয় যানজট থেকে রক্ষার জন্য কেউ কেউ গাড়ি নিয়ে আকাশ দিয়ে উড়ে যাবার স্বপ্ন দেখছে । এ স্বপ্ন এখন বাস্তব সত্য।
0 comments:
Post a Comment