রমজান। ইসলামি দিনপঞ্জির পবিত্রতম মাস। আর মাত্র ক’দিন পরেই আসছে পবিত্র রমজান। বিশ্বের লাখো কোটি মুসলমান এখন তৈরি হচ্ছেন রোজা পালনের মধ্য দিয়ে পবিত্র রমজানে আল্লাহর সান্নিধ্যে লাভের প্রত্যাশায়। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দৈহিকভাবে খাবার, কাম, ক্রোধ, লোভলালসা থেকে নিজেদের দূরে রেখে আত্মার পরিপূর্ণ খোরাক পাকাপোক্তভাবে জোগানের যাবতীয় প্রয়াসের নাম সিয়াম বা রোজা পালন। এবারের রোজা পালনের সময়টা প্রচ- এক গরমের মৌসুমে আমরা পালন করতে যাচ্ছি।
স্বাভাবিকভাাবেই এ সময়ে রোজা পালনের ক্ষেত্রে আমাদের শরীরে বিপাক প্রক্রিয়াতে ধীরগতি আসতে পারে। এ সমস্যা এড়াতে তুরস্কের ‘ডেইলি সাবাহ’ এক ডজন টুকরো তথ্য আমাদের জানিয়েছে। এগুলোই এখানে উপস্থাপন করা যাচ্ছে, যাতে করে রোজাদারেরা এই রমজান মাসের রোজা পালনের সময় তাদের শরী
রটাকে ভালোভাবে ভালোভাবে মানিয়ে নিতে পারেন।
এক : আগে থেকে তৈরি হয়ে নিন
চিকিৎসকদের পরামর্শ হচ্ছে, যারা রোজা পালনের জন্য তৈরি হচ্ছেন, তারা যেন রমজানের কয়েক দিন আগে থেকেই শরীরকে মানিয়ে নেয়ার প্রশিক্ষণ শুরু করে দেন। এ ক্ষেত্রে রোজার কয়েকদিন আগে থেকেই পর্যাপ্ত হালকা খাবার বা স্ন্যাকস জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। রোজার আগেই মাঝেমধ্যে দুয়েকটি নফল রোজা পারন করতে পারেন। এতে রমজান মাসটা শুরু করা যাবে সহজে।
দুই : ঘুমের সময় পাল্টে নিন
রমজানের সময় সেহরির সময় যাতে সহজে সজাগ হতে পারেন, সে অনুযায়ী আপনার ঘুমের সময় নির্ধারণ করুন। এ জন্য যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যান।
তিন : প্রচুর পানি পান করুন
শরীরে পানি শূন্যতা এড়াতে প্রচুর পানি পান করুন। গবেষণায় জানা গেছে, মানুষ খাবার না খেয়ে কয়েক সপ্তাহ বেঁচে থাকতে পারে, তবে পানি পান না করে বাঁচতে পারে মাত্র কয়েক দিন। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, রমজানের সময়ে একজন রোজাদারের উচিত কমেপক্ষে দুই লিটার বা ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। কফি ও চা-প্রেমীদের মনে রাখা দরকার, কফি বা চা এই পানির অভাব মেটাতে পারে না।
চার : খাবার শুরু করুন স্যুপ দিয়ে
তুরস্কে সব ঋতুর রমজান মাসেই খাবার টেবিলে অপরিহার্যভাবে থাকে স্যুপ। স্যুপ দিয়ে খাবার শুরু করলে আপনার পেটকে বাকি খাবারের জন্য তৈরি করে। এবারের রোজা পালন করতে যাচ্ছি এই গরমের মওসুমে। অতএব চিকিৎসকেদের পরামর্শ হচ্ছে, দইয়ের তৈরি ঠা-া স্যুপই ভালো পছন্দ। এতে রোাজা পালনের বেশ কয়েকটা ঘণ্টা আরামেই কাটবে।
পাঁচ : খাবেন ধীরে ধীরে
ধীরে ধীরে খাবার খেলে তা হজমের জন্য সহায়ক হয়। কারণ, তখন মুখ থেকেই হজমের কাজ শুরু হয়। মনে রাখবেন, মস্তিষ্ক ১৫-২০ মিনিট সময় নেয় পেট ভরে যাওয়ার অনুভূতির সিগন্যাল
দেয়ার জন্য।
ছয় : প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামের কথা ভুলবেন না
রমজানের সময় গোশত, দুধজাত খাবার, ডিম ইত্যাদির মতো প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম সম্দ্ধৃ খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবেন।
সাত : অতিরিক্ত লবণ ও মশলা এড়িয়ে চলুন
রমজানের সময় অতি গরম, লবণাক্ত ও মশলার খাবার খাবেন না। কারণ, তা দিনের বেলায় হজমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
আট : স্বাস্থ্যপ্রদ হালকা খাবার উপকারী
বাদাম, শুকনো ফল ও খেজুরের মতো আপনার শরীরে শক্ত জোগাবে। সেই সাথে জোগাবে শরীরের পুষ্টি।
নয় : ভুলবেন না আঁশজাতীয় খাবার
রমজানে খাবারের সময় পাল্টে যাওয়ার কারণে আপনার পেটে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ সমস্যা এড়ানো যেতে পারে সমৃদ্ধ আঁশযুক্ত খাবার খেয়ে। এ খাবারে থাকতে পারে শস্যদানা, ফলমূল ও শাকসবজি।
দশ : প্রোটিন নিয়ন্ত্রণ করুন
সারাদিন রোজা রেখে অতিরিক্ত পরিমাণ প্রোটিন খাবার খেলে আপনি মোটা হয়ে যেতে পারেন। আপনার হজমে গ-গোল দেখা দিতে পারে। এসব সমস্যা এড়াতে প্রোটিন খাবার নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন আছে।
এগারো : সেহরি বাদ দেবেন না
কখনোই সেহরি না খেয়ে রোজা রাখবেন না। অনেকের মতে সেহরি খুবই গুরুত্বপূর্ণ খাবার। কারণ, এটি বিপাক প্রক্রিয়াকে সচল রাখতে সহায়তা করে। এটি বিপােেকর হাজে গতিহীনতা রোধ করে।
বারো :কাজে সক্রিয় থাকুন
অনেকে রোজা রাখলে কাজ কমিয়ে দেন। তা ঠিক নয়। রোজার সময় স্বাভাবিক কাজে সক্রিয় থাকুন। ইফতারের পর কতক্ষণ হাটাচলা বিপাক কাজের জন্য সহায়ক।
0 comments:
Post a Comment