বিজ্ঞানীদের নিত্যনতুন আবিষ্কারে প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে আমাদের বিশ্ব। সময়ের কালক্রমে মানুষ নিজের প্রয়োজনের স্বার্থে আবিষ্কারের ক্ষেত্রকে প্রসারিত করেছে। বর্তমানে প্রযুক্তির সাথে চলছে প্রযুক্তির প্রতিযোগিতা। প্রযুক্তিপণ্য তৈরি হয় মানুষের কাজে সাহায্য করতে। কম্পিউটার, ল্যাপটপ থেকে শুরু করে মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন প্রযুক্তিপণ্য মানুষের জীবনযাত্রা প
াল্টে দিচ্ছে। আগামীর বিশ্ব পরিবর্তিত হবে এমন কিছু প্রযুক্তি নিয়ে লিখেছেন নাজমুল হোসেন
ইন্টারনেটের কল্যাণে সমগ্র বিশ্ব আজ আমাদের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। ঘরে বসে এখন আপনি চাইলে মুহূর্তেই পুরো বিশ্ব ঘুরে আসতে পারবেন। আমরা চাইলেই বিশ্বের সব খবর নিতে পারছি ইন্টারনেট নামক প্রযুক্তির কল্যাণে। আধুনিক বিশ্বের উন্নয়নে ইন্টারনেটের গুরুত্ব অপরিসীম। পরবর্তী ১০ বছরে আশা করা যায় দ্রুতগতি, কর্মদক্ষতায় ইন্টারনেটে যুক্ত হবে জিগবি, জেড-ওয়েভসহ উন্নত প্রযুক্তি। ধারণা করা হচ্ছে, অচিরেই প্রায় ৫০ বিলিয়ন নতুন ইন্টারনেট সংযোগ বিশ্বব্যাপী যুক্ত হবে। এর আওতায় কম্পিউটার, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, টেলিভিশন ডিভাইসসহ যুক্ত হবে আরো নতুন নতুন প্রযুক্তি।
তথ্য ধারণক্ষমতা : বর্তমানে বিশ্বব্যাপী তথ্য ধারণের প্রতি জোর দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। ২০০৮ সালে বিশ্বে তথ্য সংরক্ষণের জন্য ৫ এক্সাবাইট ধারণক্ষমতা ছিল। যা প্রায় এক বিলিয়ন ডিভিডি সমপরিমাণ তথ্য ধারণে সক্ষম। আর বর্তমানে ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছে গেছে ১.২ জেটাবাইটের তথ্যধারক। ১ জেটাবাইট সমান ১০২৪ এক্সাবাইট। ধারণা করা হচ্ছে, ২০১৫ সাল নাগাদ ইন্টারনেট ডেটার ৯১ শতাংশ হবে ভিডিও-নির্ভর। আর এ কারণেই তথ্য ধারণের ব্যাপারে বিপুল স্পেসকে বেশি জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
ক্লাউড কম্পিউটিং : নিরাপত্তা ও তথ্য প্রাপ্তিতে সহজলভ্যতার কথা চিন্তা করে তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদ্ধতির সৃষ্টি হয়েছে। তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে তথ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের বিকল্প কিছু হতে পারে না। ১৯৬০ সালে ক্লাউড-নির্ভর কম্পিউটিংয়ের ধারণা পাওয়া যায়। তবে প্রকৃতপক্ষে এর ধারণায় ভিত্তি লাভ করেছে ১৯৯০ সালে। আমাজন তাদের ওয়েব সার্ভিসের মাধ্যমে ইউটিলিটি কম্পিউটিংয়ে সার্ভিস শুরু করে ২০০৫ সালে। গুগল ও আইবিএম যৌথভাবে ২০০৭ সালে কিছুসংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়কে সাথে নিয়ে ক্লাউড কম্পিউটিং বিষয়ে গবেষণাধর্মী প্রজেক্ট শুরু করে।
ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্পন্ন হয় ২০০৯ সালের দিকে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, আগামী ১০ বছরের মধ্যে বিশ্বের সব তথ্যের এক-তৃতীয়াংশ তথ্য ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের আওতাভুক্ত হবে। কারণ প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের জন্য রাজস্ব ১৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারতা ও প্রতিনিয়ত উদ্ভাবনী ব্যবস্থার কারণে ২০১৪ সালের মধ্যে এর পরিমাণ গিয়ে দাঁড়াবে এক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। জনপ্রিয় প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপল সম্প্রতি তাদের মিডিয়া সম্প্রচার ও ক্লাউডভিত্তিক সার্ভিস আইক্লাউডের বিটা সংস্করণ চালু করেছে। এ সেবাটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ করতে হবে। অ্যাপলের আইডি ব্যবহার করে এ সার্ভিসটি ব্যবহার করা যাবে। এ সার্ভিসটিতে ৫ গিগাবাইট পর্যন্ত স্টোরেজ বিনামূল্যেই ব্যবহার করা যাবে। ১০ গিগাবাইটের জন্য ২০ ডলার, ২০ গিগাবাইট ৪০ ডলার ও ৫০ গিগাবাইটের ক্ষেত্রে ১০০ ডলার খরচ হবে।
আধুনিক নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা : প্রযুক্তির উন্নয়নে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো উন্নত নেটওয়ার্ক তথা আধুনিক যোগাযোগ মাধ্যম। আশা করা হচ্ছে, ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী সর্বত্রই ব্যবহারকারীরা নেটওয়ার্কে ৫০ এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ সুবিধা পাবেন। বহির্বিশ্বে থ্রিজি ব্যাপক প্রসার পেলেও আমাদের দেশে এর সুবিধা এখনো পৌঁছেনি। কিন্তু প্রযুক্তি বিশ্ব আগামী ১০ বছরে থ্রিজির স্থান দখল করতে যাচ্ছে ৪০জি থেকে ১০০জি। এর কর্মদক্ষতা কতটুকু হবে তা ব্যবহারকারীরা কিছুটা হলেও অনুধাবন করতে পারছেন।
ক্ষুদ্র বিশ্ব আরো ক্ষুদ্র হচ্ছে : দূরত্ব যতই হোক আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থার কারণে বিশ্বের দূরত্ব প্রতিনিয়ত কমছে। এটি নিয়ে এখন আর কারো কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। মহাবিশ্বের তুলনায় পৃথিবী ক্ষুদ্র হলেও প্রযুক্তির কল্যাণে এই ক্ষুদ্র বিশ্ব যেন আরো ক্ষুদ্র হতে চলছে। বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেটের প্রসারতা, সামাজিক যোগাযোগ ও শক্তিশালী দ্রুতগতি নেটওয়ার্কিংয়ের কারণে বিশ্বের অচেনা স্থানটি আজ আর অচেনা থাকছে না। স্থানের পাশাপাশি বিশ্বের দূরপ্রান্তের অজানা মানুষটিও আজ আর অচেনা থাকছে না। প্রযুক্তির কল্যাণে ভূমিকম্প, জলোচ্ছ্বাস বা প্রাকৃতিক যেকোনো দুর্যোগের খবর মুহূর্তের মধ্যেই বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে দ্রুতগতিতে পৌঁছে যাচ্ছে। গবেষকরা দাবি করছেন, আগামী ১০ বছরে ভৌগোলিক এ যোগাযোগ আরো প্রসার লাভ করবে।
আধুনিক যন্ত্রমানব : রোবটের কারিগর বলা হয় আইজ্যাক আসিমভকে। তার অন্যতম সৃষ্টি মোশন সিনেমা আই রোবট। এ সিনেমার ওপর নির্ভর করে তৈরি করা হয়েছে আজকের মানবীয় গুণাবলিসম্পন্ন রোবট। সায়েন্স ফিকশন বা কল্পবিজ্ঞানের বইগুলো থেকেই বিজ্ঞানীরা নানা ধরনের রোবট তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে আমরা দেখতে পাচ্ছি অসংখ্য বুদ্ধিমান রোবট, যাদের চেহারা ও আকৃতিও মানুষের মতোই। আগামী ১০ বছরে পৃথিবীতে যা ঘটবে তাতে আমাদের ভাবনা অনেকটাই পাল্টে যেতে পারে রোবট নামক যন্ত্রমানবের কল্যাণে। ২০১৫-২০২০ সালের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিটি বাড়িতে কাজকর্মের জন্য রোবট ব্যবহৃত হবে। এই দৃশ্য ইউরোপের অনেক দেশেই দেখা যেতে পারে। ২০১৮ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার সার্জারির কাজেও রোবট ব্যবহৃত হতে পারে।
২০২২ সালে নিজস্ব বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন রোবট আবিষ্কৃত হবে এবং এসব রোবট নির্দিষ্ট পরিবেশে ভালো কাজ করবে। এসব যন্ত্রমানব মানুষের তুলনায় অধিকতর শারীরিকভাবে সামর্থ্যবান হবে। আইবিএমের ব্লু-বেইন প্রজেক্ট এসব যন্ত্রমানবের মানব মস্তিষ্কের মতো মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপন করা হবে, যেখানে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের সমন্বয় ঘটানো হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে এসব যন্ত্রমানব তাদের মস্তিষ্কের সঠিক ব্যবহার করতে পারবে। ২০৩২ সালের মধ্যে বিশ্বের উন্নয়নমূলক কাজে মানুষের পাশাপাশি ব্যাপক আকারে এদের ব্যবহার করা হবে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে মানুষের পরিবর্তে কর্মস্থলে এদের ব্যবহার করা হবে।
কিবো : ‘কিবো’ নামের চার ফুট উচ্চতার রোবটটি নানা কাজে পারদর্শী। মানুষের দশটি বিশেষ গুণের সব ক’টিই আছে বিস্ময়কর এ রোবটের মধ্যে। তার রয়েছে বিস্মিত হওয়ার ক্ষমতা, রাগ ও সুখানুভূতি। আপনি যদি তাকে কোনো কিছু জিজ্ঞেস করেন, তবে পণ্ডিতের মতো গাম্ভীর্য নিয়ে উত্তরও দিতে পারে সে। পারে সন্দেহভাজন দৃষ্টি নিয়ে আপনার দিকে তাকাতেও। কিবোর ভেতর ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্র কাজ করে মানুষের নাড়িভুঁড়ির মতো। হোন্ডার অসিমো প্রজেক্টের অধীনে রোবটটি তৈরি করা হয়েছে। রোবটকে ঠিক মানুষের মতো অনুভূতি ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন করে তোলার যে চিরন্তন প্রচেষ্টা বিজ্ঞানীরা শতক ধরে চালিয়ে যাচ্ছেন, কিবোর মাধ্যমে সেই প্রক্রিয়া আরো কিছু দূর এগিয়ে গেছে।
এ রোবটকে বলা হচ্ছে সবচেয়ে আধুনিক হিউম্যানয়েড রোবট। রোবট বিশেষজ্ঞ ব্রুনো বোনেল জানিয়েছেন, মানুষ ও রোবটের মধ্যে মূল পার্থক্য হচ্ছে মানসিক প্রতিক্রিয়া। আর এই রোবটটি সেখানেও সার্থক হয়েছে। এ রোবট ছবি ও শব্দ ছাড়াও স্পর্শের অনূভূতি পাঠাতে সক্ষম। মানবরূপী রোবট নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গবেষণাকেন্দ্র হচ্ছে হিউম্যানয়েড রোবটিকস ইনস্টিটিউট। এ ইনস্টিটিউটের অন্যতম গবেষক ও মুখপাত্র প্রফেসর ইনো জানিয়েছেন, ডিজিটাল মানব তৈরিতে তারা অগ্রসর হয়েছেন বহু দূর। লাখ লাখ সফটওয়্যার ব্যবহার করে মানবাকৃতির রোবটের ভেতর সঞ্চার করা হয়েছে প্রখর অনুভূতি আর মালিকের প্রতি বিশ্বস্ততা। এ ধরনের রোবটের বাণিজ্যিক ব্যবহার নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে চলছে এখন নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
রোবেথেস্পিয়ান : ইঞ্জিনিয়ারড আর্টসের অ্যানড্রয়েড রোবট রোবেথেস্পিয়ান। কেনেডি স্পেস সেন্টারে এই রোবোথেস্পিয়ান ব্যবহার করে থাকে নাশা। দর্শনার্থীদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্যই হিউম্যানয়েড ঘরানার এই রোবট ব্যবহার করা হয়।
আইকাব : নানা ধরনের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারার মতো কাজে পারদর্শী রোবট আইকাব। অভ্যর্থনা জানানো থেকে শুরু করে হাসপাতালে রোগীদের মানসিকভাবে চাঙ্গা করতেও এটি সাফল্যের সাথে কাজ করছে আইকাব।
ওয়ার্ডেন : দক্ষিণ কোরিয়ার একটি জেলে গার্ডদের কষ্ট লাঘবের জন্য ব্যবহার হচ্ছে ‘রোবট ওয়ার্ডেন’। এশিয়ান ফোরাম ফর কারেকশন তিনটি পাঁচ ফুটের রোবট ‘ইনস্টল’ করে দক্ষিণ কোরিয়ার একদল গবেষকের কাছ থেকে। এই তিনটি রোবটের এক মাসের ট্রায়ালের জন্য কোরিয়া সরকার বরাদ্দ করেছে ৫৫৪ হাজার পাউন্ড। গবেষণা ও রোবট তৈরির কাজে ৪১৫ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ হয়েছে। কোরিয়া সরকার আশা করছে, এই রোবটগুলো কার্যকর হওয়ার পর জাপান ও চীনের মতো ‘হাইলি টেকনিক্যাল’ দেশগুলোর সাথে পাল্লা দিতে পারবে।
টেলন : জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করছে যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত ‘টেলন’ নামের রোবট। এই রোবটগুলো তেজস্ক্রিয়তা সহিষ্ণু। ইতোমধ্যে রোবটগুলো পারমাণবিক কেন্দ্রটির তেজস্ক্রিয়তার পরিমাপে কাজ করছে। নিয়মিত বিরতিতে তথ্যও পাঠাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ধ্বংসের পর তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে কারিগরি সহায়তা দিয়েছিল টেলন। টেলন রোবট পাহাড়ে আরোহণ ও তুষারপাতের মধ্যে চলাফেরার কাজও করতে সক্ষম। এরা চলতে পারে পানির মধ্যেও। মার্কিন সেনাবাহিনীতে এই রোবট সংযোজিত হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করার জন্য।
পোশাকে প্রযুক্তির ব্যাবহার : মাত্র এক দশক আগেও পোশাকের সাথে প্রযুক্তির সম্পৃক্ততা কারো মাথায় আসেনি। সাম্প্রতিক সময়ে মানুষের রুচির পরিবর্তনের সাথে প্রযুক্তি যুক্ত হচ্ছে ফ্যাশন হিসেবে। সম্প্রতি আইপ্যাড রাখার জন্য তৈরি হয়েছে ফ্যাশনেবল ওয়েস্টকোট। এ কোটের পকেটেই শখের আইপ্যাডটি রেখে দেয়া সম্ভব। আইপ্যাড রাখার উপযোগী এই পোশাকটি তৈরি করেছে যুক্তরাজ্যের প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান প্রোপোর্টা। মুডি জ্যাকেটটির প্রকৃত নাম বিএলইউ জ্যাকেট। এটি তৈরি করেছে সানফ্রান্সিসকোভিত্তিক প্রতিষ্ঠান লুনার ডিজাইন।
এ জ্যাকেটটি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে জৈব ইলেকট্রনিক কাগজ। জ্যাকেটটি তিন ধরনের কাজ করতে পারে। এটি কারো মেজাজ কেমন সেটির প্রতিফলন দেখায়। এ কাজটি করে জ্যাকেটে ব্যবহৃত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক চিপ। রঙ পরিবর্তনের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর মেজাজ বা মানসিক অবস্থা বোঝাতে পারে এ জ্যাকেটটি। দ্বিতীয়ত, এটিতে রয়েছে জিপিএস নেভিগেশন পদ্ধতি। তৃতীয়ত, যে কাজটি এ জ্যাকেটটি করে তা হলো বিজ্ঞাপন প্রদর্শন। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ম্যাক ১০ ও পোশাক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রিবুক মিলে তৈরি করেছে একটি পোশাক। এতে বিভিন্ন সেন্সর ও মাইক্রোচিপ লাগানো রয়েছে। এ পোশাকটি পরলে পরিধানকারীর হার্টের গতি, রক্তচাপ ও জয়েন্টে ব্যথার তথ্য পাওয়া যাবে। ম্যাক ১০ পরিকল্পনা করেছে শার্টের মতো পরে কত দূর হাঁটাচলা করা হলো বা দেহের তাপমাত্রা বা দেহে পানির পরিমাণ কত সেসব তথ্যই এ শার্টটি বলে দিতে পারবে। কল্পকাহিনীর মতো শোনালেও সম্প্রতি গবেষকরা উদ্ভাবন করে দেখিয়েছেন টি-শার্টও মোবাইল চার্জ করতে পারে। গবেষকদের মতে, উচ্চমাত্রার শব্দ শোষণ করতে পারে টি-শার্ট এরপর সেই শব্দশক্তিকে বিদ্যুৎশক্তিতে রূপান্তর করে মোবাইল চার্জ করতে পারে। এ জন্য শব্দ যত জোরে হবে মোবাইল ফোনটি তত বেশি চার্জ হবে। এ টি-শার্টটি তৈরি করেছেন টেলিকম জায়ান্ট অরেঞ্জের উদ্ভাবকরা। যখন কোথাও উচৈস্বরে ব্যান্ড পার্টি বা কনসার্ট হবে তখন চাইলেই টি-শার্ট থেকেই দ্রুত মোবাইল চার্জ করিয়ে নেয়া সম্ভব।
আইজ্যাক আসিমভ সায়েন্স ফিকশনের অনাগত ভবিষ্যতের কাহিনী আমাদের শুনিয়েছেন। তার রোবট সিরিজে পজিট্রনিক ব্রেইনের কথা বলেছেন। পজিট্রনিক ব্রেইন হলো একটি বিচ্ছিন্ন বা স্বাধীন টেকনিক্যাল ডিভাইস। তা নিজেই নিজেকে পরিচালনা করতে সক্ষম। নির্দিষ্ট তিনটি শর্ত মেনে কাজ করবে এ ব্রেইন। ভাবলে অবাক হতে হয়, রোবট নিয়ে কত দীর্ঘ সময় আসিমভ ভেবেছেন। ধারণা করা হচ্ছে আগামী ১০ বছরের মধ্যে মানবদেহে বিভিন্ন অঙ্গ প্রতিস্থাপনে বিজ্ঞান সম্পূর্ণরূপে সফলতার সাথে কাজ করতে পারবে। ২০১৯ সালে ৩০ ভাগ বাণিজ্যিক পণ্যে ন্যানো টেকনোলজি ব্যবহৃত হবে। আমেরিকার সেনাবাহিনীর ২০২০ সালের এক লক্ষ্য অনুযায়ী বায়োলজিক্যাল অস্ত্র, ন্যানো ম্যাসল ও বিভিন্ন রাসায়নিক প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ন্যানো টেকনোলজি ব্যবহৃত হবে।
তথ্যসূত্র : ইন্টারনেট
0 comments:
Post a Comment