WHAT'S NEW?
Loading...

ক্রিকেটে ভারতের অনৈতিকতা নিয়ে শাফিন অাহমেদ

 


আমি রূপম ও রূপসার লেখা পড়েছি। আর রূপসা এর আগে লিখেছেন আমি ইন্ডিয়াকে অসম্মান করে দুই বছর ধরে লিখছি। আমার লেখার ধরন 'এন্টি ইন্ডিয়া'। আমি যখন সে লেখাগুলো লিখেছি, তা বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে লিখেছি। অতিরঞ্জিত নয়। যা ঘটেছে তা নিয়ে লিখেছি। ভারতের কোনও কাজ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হয়ে থাকলে, সেটা নিয়ে বাংলাদেশিরা কথা বলবে- এটাই স্বাভাবিক। আমি শাফিন আহমেদ; এ

কজন বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে এগুলো লিখেছি।


কলকাতায় আমার অনেক বন্ধু রয়েছে। তাদের সঙ্গে সুসম্পর্কও আছে। আমার লেখাগুলো কিছু ভারতীয়র খারাপ উদ্দেশ্য ও কাজের প্রতি প্রতিবাদ জানিয়ে। বন্ধুদের উদ্দেশে এগুলো নয়। তাদের দেশপ্রেম থাকলে আমাদের কেন থাকবে না? রূপমকে আমি ছোট ভাইয়ের দৃষ্টিতে দেখি।


রূপমকে উদ্দেশ করে বলছি, বাংলাদেশকে নতুন পাকিস্তান বলাটা তার ক্ষমার অযোগ্য ভুল। আমাকে বোঝাতে হবে তুর্যর কমেন্টের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক কী? আমরা কথা বলছি, বাংলাদেশি হিসেবে। এখানে কেন পাকিস্তান এল? সুতরাং রূপম ও আশেপাশের মানুষেরা পোষণ করেন, ভারতকে নিয়ে কিছু বলা যাবে না। বললেই পাকিস্তানি হয়ে যাবে। এটা হাস্যকর ও অযোক্তিক। রূপম যদি বলতে চান, আমি শুধু তুর্যকে বলেছি, এটাও অগ্রহণযোগ্য।


বাংলাদেশিদের কেন সমালোচনা করছে তাহলে তারা? তুর্য’র কথায় নাকি তার বাঙালি অস্তিত্বে টান পড়েছে। বাংলা ভাষায় আমরা কথা বলি। একটি স্বাধীন দেশ বাংলাদেশ। বাঙালি হিসেবে আমাদের সবাই চেনে। আমরা বাঙালি নই, শুধু রূপম একাই বাঙালি? কী অদ্ভূত!


ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা। কিন্তু এটাতে দুর্নীতি ঢোকানোর পেছনে ইন্ডিয়া সবচেয়ে বেশি দায়ী। সম্ভবত একাই দায়ী। বাংলাদেশের ম্যাচে আম্পায়ারের সব সিদ্ধান্ত চলে গেলো তাদের দিকে? ভারতের প্রবল প্রভাব এবারের বিশ্বকাপে দেখেছি।


ভারতের অনৈতিক প্রভাব থেকে বাঁচতে অনেক আগে নিরপেক্ষ আম্পায়ারের প্রচলন শুরু হয়েছিল। এর আগে নিয়ম ছিল, আয়োজক দেশের দু'জন আম্পায়ার ম্যাচ পরিচালনা করবেন। কিন্তু একটা সময় দেখা গেলো ভারতে কোনও সফরকারী দল জিতে ফিরতে পারত না তাদের পক্ষপাত্বিতের কারণে। এরপর আইসিসি নিয়ম করলো, স্বাগতিক দেশের পাশাপাশি আইসিসি মনোনীত একজন আম্পায়ার থাকবেন। আর এখন সেই আম্পায়ারকেও হাত করার চেষ্টা করা হয়।


ম্যাচ পাতানোতে জুয়াড়িদের বিষয়টিতে ভারতের প্রভাব বেশি। যারা ম্যাচ পাতাচ্ছেন তাদের পেছনে কোন দেশের জুয়াড়ি আছে? কেন তারা ধরা পড়ছে না?


এবারের আসরের ভারত-অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচের আগে সিডনির (এসিজি) মাঠের প্রধান কিউরেটর পরিবর্তন হয়ে গেল। একটা ব্রাউনি ও ন্যাড়া পিচ করা হয়েছে। যার নির্দেশনা এসেছে আইসিসি থেকে। টাকার জোরে অনেক কিছু পরিবর্তন হচ্ছে। এগুলোই ভারতের দুর্নীতি ও প্রভাব। এমন অনেকে অনৈতিক বিষয়ে বাংলাদেশি হিসেবে আমি এর আগে কথা বলেছি। যেগুলোতে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।


আমরা তো তাদের আগে আক্রমণ করেনি। 'মওকা মওকা' বিজ্ঞাপন কারা তৈরি করল? লিখল, ভারত বাংলাদেশকে জন্ম দিয়েছে ১৯৭১ সালে। যে দেশের মাটি ৩০ লাখ শহীদের রক্তে রঞ্জিত। ২ লাখ মা-বোন তাদের সর্বস্ব দিয়েছেন এ বাংলাদেশকে জন্ম দিতে। আজ ভারতীয়রা বলছে, বাংলাদেশ তৈরি করেছে তারা। শহীদের রক্ত কি এতটাই তুচ্ছ্? এটা একজন বাংলাদেশি হিসেবে কীভাবে মেনে নি-ই আমরা। রক্তের দামে কিনেছি, কারও দান থেকে পাইনি এই বাংলাদেশ।


 


আমাদের অস্তিত্বে যখন আঘাত করা হলো, তখন কোথায় ছিলেন তারা? এরপর আরও একটি বিজ্ঞাপনে দেখানো হলো, জন্মদিনের অনুষ্ঠানের সব দেশ এসেছে। ছোট বাচ্চাকে দিয়ে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করা হলো। বলা হলো 'ও তুমিও এসেছো?'। এভাবে ক্রিকেট খেলুড়ে সব দেশকে অপমান করা হয়েছে। এমন নোংরামি ভদ্রলোকের খেলায় হয় না, যা ভারত করেছে। আর কোনও দেশে এমন নির্লজ্জতা দেখিনি। ক্ষোভটি ম্যাচ হেরে যাওয়ার পরে নয়, বাংলাদেশকে হেয় করার পর থেকে শুরু হয়েছে। ৬০-এর দশকে নিজেদের স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে আগুন ধরানো হয়েছে বারবার।


যখন দেখত, ম্যাচ তারা হেরে যাচ্ছে। ভারতীয় সমর্থকদের লক্ষ্য ছিল, ম্যাচ বানচাল করে দেওয়ার। গ্যারি সোবার্সের মতো কিংবদন্তী কলকাতার রাস্তা দিয়ে দৌড়ে হোটেলে ঢুকেছেন, শুধু তাদের ক্ষ্যাপাটে সমর্থকদের কারণে। তার প্রতিফলন এখনও রয়েছে। ম্যাচ তো আমরা অনেক হেরেছি। বিশ্বকাপের শুরু থেকেই আমাদের নিয়মিত ছোট করার চেষ্টা করা হয়েছে বলেই এমন ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে।​


একজন ক্রিকেটপ্রেমী হিসেবে আমি আশা করি, বিশ্বক্রিকেট ভারতের অনৈতিক আচারণ মুক্ত হবে। আর সংগীতশিল্পী হিসেবে আমার প্রত্যাশা, সংগীতের জগতে ক্রিকেটের এ দৌরাত্ম্যের অশুভ কোনও প্রভাব পড়বে না। বরং ভ্রাতৃসুলভ সৌহার্দ্যে আমরা এগিয়ে যাব।


সূত্র : বাংলাট্রিবিউন


 

0 comments:

Post a Comment