মুনীর তৌসিফ
সুপরিচিত ফুড সাইকোলজিস্ট ব্রায়ান ওয়ানসিক ২৫ বছর কাটিয়েছেন প্রথাবহির্ভূত গবেষণায়। তিনি তার গবেষণার মাধ্যমে আমাদের খাবারের ব্যাপারে অনেক কৌশল উদ্ভাবন করেছেন, যাতে আমরা অধিকতর স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণের উপায় হাতে পাই। সহজে ক্ষুধাকে পরাস্ত করতে পারি। এখানে উপস্থাপিত হলো তারই গবেষণাসূত্রে
পাওয়া ক্ষুধাকে পরাস্ত করার সাতটি কৌশলী উপায়।
বেশির ভাগ পুষ্টিশিক্ষা খুব একটা কার্যকর হয় না। মানুষ জানে এক টুকরো চকোলেটের চেয়ে একটি আপেল বেশি ভালো। তা জানার পরও এরা আপেল খাবে না চকোলেট খাবে, তা সব সময় মাথায় রাখেন না। ফলে অনেক মা-বাবাই তার সন্তানদের যত না আপেল খাওয়ান, তার চেয়ে বেশি খাওয়ান চকোলেট। নিজেরাও আপেল না খেয়ে যখন-তখন চকোলেট খান। সে যা-ই হোক, আমরা কী করে খাই, কেন খাই এর মনোস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধানমূলক শত শত সমীক্ষা চালানোর পর ব্রায়ান ওয়ানসিক বুঝতে পেরেছেন, পুষ্টি বিষয়টিকে জানা একটি কল্যাণবহ ভালো কাজ। তবে তার চেয়েও ভালো কাজ হচ্ছে আমাদের খাদ্যাভ্যাসে ও খাওয়ার পরিবেশে পরিবর্তন আনা। আর তা করতে আপনার চিন্তাভাবনা যতটা না প্রয়োজন, তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন খাবার বাছাই করা। এর মাধ্যমে আপনি কৌশলে পরাস্ত করতে পারেন আপনার ক্ষুধাকে। এমনই কয়টি কৌশলের কথাই আমরা জানব।
ভাবুন কোনটা খাবেন?
লাখ লাখ বাবা-মা তাদের সন্তানদের নিয়ে প্রতিদিন ফাস্টফুড রেস্তরাঁয় যেতে পছন্দ করেন। বেশির ভাগ বাবা-মা চেষ্টা করেন না, তাদের শিশুসন্তানকে ফেঞ্চফ্রাইয়ের পরিবর্তে আপেলের ফালি কিংবা জুসের পরিবর্তে দুধ খেতে দেবেন কি না। মানুষ ফাস্টফুডের রেস্তরাঁয় যান, কারণ তাদের সময়, ধৈর্য ও প্রণোদনা নেই এসব ঘরে তৈরি করতে, কিংবা বাচ্চাদের এসব খাবার সম্পর্কে যুক্তি-তর্ক দিয়ে ভালো-মন্দ বুঝাতে।
আমরা সবাই জানি, বাচ্চাদের একটা একগুঁয়েমি স্বভাব আছে তাদের পছন্দের খাবার খাওয়ার ব্যাপারে। একটি বাচ্চা গতকাল ফ্রাই খেলে, সে আজও ফ্রাই খেতে বায়না ধরতে পারে। এটা ভালো নয়। আমরা তাকে এমনটি করতে বাধা দিতে পারি একটি সহজ উপায়ে। বাচ্চারা কী খেতে চায় তা বাচ্চাদের কাছে জিজ্ঞাসা না করে, কী হতো মা-বাবারা যা তাকে খেতে দিতে চান তার মধ্যে সে কোনটি খেতে চায়, তা জিজ্ঞেস করলে?
এই বিষয়টি নিয়ে সমীক্ষা চালানোর জন্য ব্রায়ান ওয়ানসিকের সমীক্ষা দল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার বয়সের ২২ জন বাচ্চাকে ফাস্টফুড রেস্তরাঁয় নিয়ে যায়। তাদের আপেলের ফালি বা ফ্রাই খেতে বলা হয়। প্রথম সপ্তাহে এদের ২০ জন ফ্রাইয়ের অর্ডার দেয়। মাত্র দ্ইুজন খায় আপেল। পরের সপ্তাহে সমীক্ষা দল বাচ্চাদের জিজ্ঞেস করে ‘ব্যাটমেন কী খেতো : আপেল না ফ্রাই?’ এ প্রশ্নের জবাব পাওয়ার পর বাচ্চাদের সমীক্ষকেরা জিজ্ঞেস করেন : ‘তোমরা কী খেতে চাও : আপেল না ফ্রাই?’ এবার দেখা গেল আপেলের ফালির অর্ডার দিয়েছে এমন শিশুর সংখ্যা এক লাফে ২ থেকে ১০-এ উঠে গেছে। অর্থাৎ প্রায় অর্ধেকেই আপেল খেতে চেয়েছে।
সমীক্ষক দল কাজটি করেছেন বিভিন্ন উপায়ে এবং যা এরা করেছেন অনেকটা পাগলামোই। আপনি ব্যাটমেন, জোকার, প্রিয় শিক্ষক কিংবা তাদের সেরা বন্ধুদের কারো কথাই বলুন না কেন, সেটা কোনো ব্যাপার নয়। আসল ব্যাপারটি হচ্ছে এরা তখন ভাববার অবকাশ পায় দু’টি খাবারের মধ্যে কোনটি খাবে তা বেছে নেয়ার। আর তা করতে গিয়ে তার পছন্দকে হালনাগাদ করে নেয়।
গবেষণাগারের বাইরে : আপনি যদি সালাদ না পনিরের বেকন ফ্রাইয়ের মধ্যে একটিকে বেছে নেয়ার ব্যাপারে নিজেকে প্রশ্ন করেন : ‘কোনটি হবে আমার আদর্শ পছন্দ?’, তখন আপনি খাবারের ব্যাপারে কম ঝুঁকিতে থাকবেন। কারণ, ভালো পছন্দের বেলায় আপনি শুধু সেই খাবারটিই পছন্দ করবে না, যেটি শুধু আপনাকে তৃপ্তি দেয়। তখন কোনটি পুষ্টিকর সে বিবেচনাও আপনার মাথায় আসবে।
বাজারের টুকরি দুই ভাগ করুন
আপনি যখন বাজার থেকে সবজি ও ফল কিনবেন, তখন এর সঠিক পরিমাণটা কী হবে? আমরা আসলে এর উত্তর জানি না। আমরা যখন বাজারে যাই, তখন মোটামুটি আমাদের বাজারের ট্রলি বা টুকরির ২৪ শতাংশই ভর্তি থাকে ফল ও সবজি দিয়ে। ধরুন আপনার মুদি দোকানদার আপনার বাজারের টুকরির মাঝখানে একটি পার্টিশন দিয়ে দিলেন। তিনি একটি চিহ্ন দিয়ে ঠিক করে দিলেন সামনের অর্ধাংশে থাকবে ফল ও সবজি। আর বাকি পণ্য থাকবে পেছনের অর্ধাংশে। অন্যান্য খাবার এবং ফল ও সবজির মধ্যে কোনটা সামনে আর কোনটা পেছনে থাকবে তা কোনো বিবেচ্য নয়, এটা শুধু খাবার চিহ্নিত করার জন্য, অন্য কিছু নয়।
সমীক্ষক দল এমনি ধরনের দ্বিভাজিত ট্রলি বা টুকরি তৈরি করে নেন। যাতে ক্রেতারা কোন ধরনের খাবার কতটুকু কিনছেন, তা দোকানদার চিহ্নিত করতে পারেন। সমীক্ষায় দেখা গেছে, ক্রেতাদের মধ্যে যারা এ ধরনের দ্বিভাজিত ট্রলি বা টুকরি ব্যবহার করেন তারা আগের চেয়ে ২৩ শতাংশ ফল ও সবজি বেশি কিনেছেন। এ ধরনের ঠুকরি ক্রেতাদের ভাবনায় ফেলে দেয় তারা কোনটা কিনবেন, ফল-সবজি না অন্য পণ্য। তখন এরা সিদ্ধান্ত নেন, বেশি বেশি ফল-সবজি কেনাটা স্বাভাবিক।
গবেষণাগারের বাইরে : আপনার বাজারের ট্রলির মাঝখানে একটি ব্যাগ বা কাপড় রাখুন। এর একাংশে ফল ও সবজিজাতীয় খাবার রাখুন। আর অন্য অংশে রাখুন অন্যান্য পণ্য। এতে আপনার খাবারের মধ্যে একটা ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা হবে।
খালিপেটে বাজার করা ও চুইংগাম
আমরা অনেকেই জানি খালি পেটে বাজারে যাওয়া ঠিক নয়। কারণ, আমরা খালি পেটে বাজারে গেলে বেশি খাবার কিনি। কিন্তু ব্রায়ান ওয়ানসিকের সমীক্ষক দলের সমীক্ষায় দেখা গেছে ক্ষুধার্থ ক্রেতাও অক্ষুধার্থের সমানই পণ্য বাজার থেকে কেনেন। তবে ক্ষুধার্থরা বেশি পরিমাণে পণ্য না কিনলেও এরা অপেক্ষাকৃত নিচু মানের পণ্য কেনেন। আমরা যখন ক্ষুধার্থ থাকি, তখন খাবারে ব্যাগ্রকামনা দূর করতে সেটিই বেশি কিনি, যেটি খেতে সহজ। যেমন বিস্কুট, চিপস ও মিষ্টি খাবার।
কল্পনাই আমাদের হচ্ছে সমস্যা। ক্ষুধা আমাদের ভাবায় কোন খাবার খেলে আমাদের মুখে ভালো লাগবে। তখন ক্ষুধা তাড়ানোর জন্য আমরা স্বাদ নেই চুয়িংগাম, চিপস বা দুধের সরওয়ালা আইসক্রিমের। সমীক্ষক দল বাজার করতে আসা ক্রেতাদের বাজার করা শুরুর সময় চুইংগাম খেতে দেয়। বাজার করা শেষে দেখা গেছে, এরা আগের চেয়ে কম ক্ষুধার্থ। অন্য সমীক্ষায় দেখা গেছে, এসব ক্রেতা চুইংগাম না খাওয়া ক্রেতাদের তুলনায় ৭ শতাংশ কম আজেবাজে খাবার কিনেছেন।
গবেষণাগারের বাইরে : যখনই মুদিদোকানে ক্ষুধার্থ অবস্থায় বাজার করতে যাবেন, তখন প্রথমেই চুইংগাম কিনে খাবার বিষয়টি নিশ্চিত করবেন। এর আগে ব্রায়ান ওয়ানসিকের আরেক সমীক্ষা মতে, চিনিমুক্ত চুইংগাম কিংবা মিন্ট হওয়া ভালো।
বুফে রেস্তরাঁর অজানা রহস্য
কিছু লোক বলেন, ভূরিভোজন এড়ানোর একমাত্র পথ হচ্ছে বুফে রেস্তরাঁয় না যাওয়া : কখনোই বুফে রেস্তরাঁয় যাবেন না। এর পরও মজার ব্যাপার হলো বুফে রেস্তরাঁ ঘুরে আসুন, দেখবেন সেখানে অনেক হালকা-পাতলা লোক আসে। এরা বুফে রেস্তরাঁয় যা করে মোটা লোকেরা কি তা করেন না? যখন সমীক্ষক দল এ প্রশ্ন করে, তখন প্রায় সবার একই জবাব : ‘আমি তা জানি না।’ বুফে রেস্তরাঁয় যারা খাবার খান তারা তত সচেতনভাবে চিন্তাভাবনা করে খাবার খান না। আপনি সচেতনভাবে লক্ষ করলে তাদের খাবারের অভ্যাস ধরতে পারবেন। অতএব ব্রায়ান ওয়ানসিকের গবেষণাগারের গবেষকেরা সে কাজটিই করেন এগারোটি চাইনিজ বুফে রেস্তরাঁয়। সেখানে এরা প্রথমেই আবিষ্কার করেন : এখানে খাবার খেতে আসা হালকা-পাতলা লোকদের ৭০ শতাংশই তাদের প্লেটে খাবার নেয়ার আগে কতক্ষণ বাইরে রেস্তরাঁর প্রাঙ্গণে ঘোরাঘুরি করে আসেন। অন্য দিকে মোটাসোটা লোকেরা এরা কাছাকাছি রাখা প্লেটগুলো থেকে প্লেট নিয় খাবার ভর্তি করতে শুরু করেন। এরা তখন বসে পড়েন বুফের আট-দশ হাত কাছের কোনো খাবার টেবিলে। এরা রাখা খাবারের দিকে মুখ করে বসেন, যাতে সহজে দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় বার খাবার নিতে পারেন।
গবেষণাগারের বাইরে
ব্রায়ান ওয়ানসিকের গবেষকেরা বলে থাকেন : ‘আপনি যদি হালকা-পাতলা হতে চান, তবে তা-ই করুন যা করেন হালকা-পাতলা লোকেরা।’ তাদের সমীক্ষায় হালকা-পাতলা লোকেরা ছোট প্লেট ও চপস্টিক কম ব্যবহার করেন। এরা মোটা লোকদের চেয়ে বেশি চিবিয়ে খান। এরা রাখা খাবার থেকে যথাসম্ভব দূরে বাসে খাবার খান।
হাফ সাইজ ডিশের জাদু
কেন রেস্টুরেন্টের ডিশ এতটা বড় হবে? আর দামটাও কেন হবে তেমনি বড়? রেস্টুরেন্টগুলো মনে করে, রেস্টুরেন্টগুলো ডিশে যত বেশি করে খাবার দেবে মানুষ তত বেশি রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে আসবে, রাস্তার খাবার খাবে না। কিন্তু এতে উল্টো ফল দাঁড়াতে পারে। ব্রায়ান ওয়ানসিকের সমীক্ষক দল সমীক্ষা চালান মিনেসোটার একটি ট্রাকস্টপের রেস্টুরেন্টে। রেস্টুরেন্টকে বলা হয়, পপুলার ডিশগুলো হাফ সাইজে কম দামে অফার করতে এবং তারা তা করে। এর ফলে এরা লোকসান দেয়ার বদলে আরো বেশি অর্থ পায়। কিভাবে, তাই বলছি। লেস্টার ও গ্রেস নামের এক দম্পতি নিয়মিত রেস্টুরেন্টে আসতেন। এরা ১০ ডলারের চিকেন ব্রেস্ট মেইন কোর্স দুজনে ভাগ করে খেতেন। কারণ, এটি একজনের জন্য অনেক বেশি হয়ে যায়। এখন এরা হাফ সাইজের নিজ নিজ মেইন কোর্স অর্ডার দেন। তা ছাড়া এরা অতিরিক্ত সালাদের সাইড অর্ডারও দেন। হাফ সাইজ অফারের পর তিন মাসের মধ্যে বেশি বেশি লোক এ রেস্টুরেন্টে আসতে শুরু করে। দেখা গেল টোটাল মেইন কোর্সের চেয়ে এখন বেশি খাবার বিক্রি হচ্ছে হাফ সাইজ ডিশ। এরা একই সাথে প্রতি মাসে আগের চেয়ে অতিরিক্ত আরো ৪৩৫টি সালাডের সাইড অর্ডারও পাচ্ছে।
গবেষণাগারের বাইরে
রেস্টুরেন্টকে বলুন : ‘আমাকে কম দামে হাফ সাইজের ডিশ দিন। তাহলে আমি পেটে স্টার্টার ও ড্রিঙ্কের জন্য জায়গা পাবো।’ এটি অবাক করা ব্যাপার, বিগ চেইনের রেস্টুরেন্টেও এর ভালো ফল পাওয়া যায়। হাফ সাইজের ডিশ অফার করলে রেস্টুরেন্টে টেকঅ্যাওয়ে কনটেইনার আসা ও অর্ডার আসার সংখ্যা বেড়ে যায়।
ওয়ার্ম পেপসি ক্যান সলিউশন
এক লোককে ব্রায়ান ওয়ানসিকের গবেষণাগারে রেফার করা হয় তাকে পরামর্শ দেয়ার জন্য, কী করে ভাঙা যায় তার চিকিৎসকদের অভিহিত ‘পেপসি অ্যাডিকশন’? পেপসি অ্যাডিকশনের অর্থ দিনে ১২টিরও বেশি কোল্ড ক্যান পেপসি পানের নেশা। লোকটির ছিল প্রবল ডায়াবেটিক। এর পরও তার অফিসের ছোট্ট একটি রেফ্রিজারেটরে থাকত প্রচুর পেপসি ক্যান। এই রেফ্রিজারেটর থেকে মুক্তি পেতে কিংবা পেপসি পান অর্ধেকে নামিয়ে আনার জন্য তাকে পরামর্শ দিলেই তা কর্যকর হয়ে যাবে না। তাই সে পরামর্শ না দিয়ে ব্রায়ান ওয়ানসিক তাকে বলেন, তিনি তার সবগুলো ক্যানের পেপসি পান করতে পারেন যদি তিনি একটি বিষয়ে রাজি হন : তিনি একসাথে তার রেফ্রিজারেটরে একটির বেশি পেপসির ক্যান রাখতে পারবেন না। তিনি যখন এতে রাজি হলেন, তখন তিনি তার পেপসি অ্যাডিকশনের মাত্রা দুই-তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় তিনি ওয়ার্ম পেপসি কতটুকু পছন্দ করেন এবং তাক ওয়ার্ম পেপসি খেতে দিলে দিনে কয় ক্যান খাবেন। তখন তিনি জানান, ওয়ার্ম পেপসির প্রতি তার আকর্ষণ কম। তাই দিনে ৪-৫ ক্যানের বেশি খেতে পারবেন না।
গবেষণার বাইরে
আপনার ট্রিগার ফুডকে অনাকর্ষণীয় করে তুলুন। যেমনটি ওয়ার্ম পেপসি এই ভদ্রলোকের কাছে। সেই সাথে আনার ট্রিগার ফুড যাতে সহজেই হাতের নাগালে না পাওয়া যায় তার ব্যবস্থা করুন।
চিকন লোকের পাকঘর
আমরা যদি জানতাম হালকা-পাতলা লোকদের পাকঘর কেমন, তাহলে আমরাও আমাদের পাকঘর তাদেরটির মতো করে নিতে পারতাম। এ বিষয়ে একটি সমীক্ষা চালানোর জন্য ব্রায়ান ওয়ানসিকের গবেষকেরা নিউ ইয়র্কের সাইরাকস শহরটিকে বেছে নেন। এরা শহরের কোনো বাড়িতে ঢুকলে সব কিছুর ছবি তোলেন : থালাবাসন, সিঙ্ক, রেফ্রিজারেটর, শেলফ, বেঞ্চটপ, পেট-ফুড ডিশ, টেবিল, লাইটিং। এমনকি এলোপাতাড়ি ছবি নেন অন্যান্য ছোটখাটো জিনিসপত্রেরও। যেমন তাদের রেফ্রিজারেটরে সাঁটা ম্যাগনেটের ছবিও। কোনো কিছুর ছবিই বাদ যায়নি। এরপর এই সমীক্ষকেরা আট মাস সময়ে এসব রান্নাঘরের কোডিং করে দেখতে চান কোন লোক আলাদাভাবে কী করছেন। এরা অবাক হয়ে দেখেন রান্নাঘরের আকারটা কোনো সমস্যা নয়। বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে, রান্নাঘরে আপনি কী কী দেখলেন তা। যে মহিলা তার বেঞ্চটপে পটেটো চিপস রাখেন, যিনি রাখেন না তার তুলনায় তিনি গড়পড়তা সাড়ে ৩ কেজি ওজন বেশি। যে মহিলা তার বেঞ্চটপে রাখেন ব্রেকফাস্ট সেরিয়াল, যিনি তা রাখেন না তার তুলনায় গড়ে সাড়ে ৯ কোজি ওজন বেশি। ‘ইনসাইট, ইন স্টমাক’ অর্থাৎ আমরা যা দেখি তা খাই, যা দেখি না তা খাই না।
গবেষণাগারের বাইরে
নতুন করে সাজান আপনার কাপবোর্ড, প্যান্ট্রি ও রেফ্রিজারেটর। যাতে সেরা খাবারটি প্রথমেই আপনার নজরে আসে।
0 comments:
Post a Comment